ক্যারিয়ার হিসেবে ফ্রিল্যান্সিং বেছে নিবেন কেন! কিছু টিপস ও পরামর্শ
আধুনিক যুগে বেশিরভাগ মুক্তপেশার কাজগুলো ইন্টারনেট মাধ্যমে সম্পন্ন হয়ে থাকে। ফলে মুক্ত পেশাজীবীরা ঘরে বসেই তাদের কাজ করে উপার্জন করতে পারেন। এ পেশার মাধ্যমে অনেকে প্রচলিত চাকরি থেকে বেশি আয় করে থাকেন, তবে তা আপেক্ষিক। ইন্টারনেটভিত্তিক কাজ হওয়াতে এ পেশার মাধ্যমে দেশি-বিদেশি হাজারো ক্লায়েন্টের সাথে পরিচিত হওয়ার সুযোগ ঘটে। যার কারণে বর্তমানে ছাত্র- ছাত্রী এবং অনেক চাকুরীজীবি এই পেশায় আসছেন।
বর্তমানে আউটসোর্সিং হচ্ছে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের তৃতীয় ক্ষেত্র।
ফ্রিল্যান্সিং হচ্ছে মাল্টি বিলিয়ন ডলারের একটা বিশাল বাজার।
ফ্রিল্যান্সার হতে গেলে যা করতে হবেঃ
ইন্টারনেটের মাধ্যমে আউটসোর্সিংয়ের কাজ অনেকেই করছেন, আবার অনেকে নতুন করে শুরু করতে যাচ্ছেন। অনলাইন আউটসোর্সিংয়ের সঙ্গেই জড়িয়ে থাকা আরেকটি শব্দ হলো ফ্রিলান্সিং (Freelancing)। ফ্রিল্যান্সিং বলতে ‘মুক্ত পেশা’ বোঝানো হয়। এখান থেকেই ফ্রিলেন্সার বা মুক্ত পেশাজীবী কথাটা এসেছে। প্রাতিষ্ঠানিকভাবে না করে ব্যক্তিগতভাবে যখন কেউ আউটসোর্সিংয়ের কাজ করেন তখন তাদের ফ্রিল্যান্সার বলা হয়। তবে এটা যে কোনো পেশার ক্ষেত্রে হতে পারে।
সাধারণত যেসব ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান অনলাইনের মাধ্যমে কাজ করে তাদের ফ্রিল্যান্সার বলে। আসলে মুক্ত বা স্বাধীনভাবে কাজ করার মাধ্যমই হলো ফ্রিল্যান্সিং। ফ্রিলান্সাররা দেশ-বিদেশের সবার সঙ্গে কাজ করে সম্পূর্ণ নিজের স্বাধীনতায়। কেউ তাকে বাধা বা কাজ বিঘ্নিত করতে পারে না। গতানুগতিক চাকরির বাইরে নিজের ইচ্ছামত কাজ করার স্বাধীনতা থাকে ফ্রিল্যান্সিংয়ে। ফ্রিল্যান্সার হচ্ছেন এমন একজন ব্যক্তি যিনি কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী চুক্তি ছাড়া কাজ করেন। এখানে একদিকে যেমন রয়েছে যখন ইচ্ছা তখন কাজ করার স্বাধীনতা, তেমনি রয়েছে কাজের ধরন বাছাই করার স্বাধীনতা। হতে পারে তা ওয়েবসাইট তৈরি, থ্রিডি এনিমেশন, ছবি সম্পাদনা, ডাটা এন্ট্রি বা শুধু লেখালেখি করা।
অর্থাত্ গতানুগতিক ৯টা-৫টা অফিস সময়ের মধ্যে ফ্রিল্যান্সারদের স্বীমাবদ্ধ থাকতে হয় না। ইন্টারনেটের কল্যাণে ফ্রিল্যান্সিং নির্দিষ্ট স্থানের সঙ্গেও সম্পর্কযুক্ত নয়।অনলাইনে সহজে আউটসোর্সিংয়ের কাজ পেতে কিছু কৌশল অবলম্বন করলেই চলে। নিচে সে রকম কিছু কৌশল দেওয়া হলো।
নতুন যারাঃ
- পছন্দের বিষয় নিয়ে সব সময় গবেষণা করুন
- ইউটিউবে টিউটোরিয়াল দেখুন
- অনবরত কাজের অনুশীলন করুন
- কাজসংশ্লিষ্ট অভিজ্ঞদের পরামর্শ নিন
- প্রয়োজনে ভালো কোনো প্রতিষ্ঠানে কাজ শিখুন
আমি কোন সাইটে কাজ করা শুরু করব?
আপনি যদি কিছু কাজ জানেন, তাহলে নিচের যেকোন একটি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে একাউন্ট খুলুন। একাউন্ট খুলে ঐ মার্কেটপ্লেস সম্পর্কে আগে ভালো করে জানুন। প্রত্যেকটা মার্কেটপ্লেস এ নিজের প্রোফাইল সাজাতে হয়। প্রোফাইলে নিজে কি কি কাজ পারি তা যুক্ত করতে হয়। নিজে যেটা পারি, সেটা সত্যি পারি কিনা, তা জন্য অনলাইন পরীক্ষা দিতে হয়। এসব করতে পারলে বুঝতে পারবেন আপনি কাজ করার জন্য উপযুক্ত। এরপর কাজ পাওয়ার জন্য, কাজ করার জন্য বিড করতে থাকুন। যে কাজটি পারবেন বলে মনে হয় তাতে বিড করুন। ক্লায়েন্টকে সুন্দর একটা মেসেজ দিন। কাজ পেতে বেশি সময় লাগবে না। আমি এখানে কিছু মার্কেটপ্লেসের লিঙ্ক দিচ্ছি। এর বাহিরে আরো অনেক গুলো মার্কেটপ্লেস রয়েছে।
- https://www.upwork.com/
- http://www.freelancer.com/
- http://www.guru.com/
- http://99designs.com/
- http://fiverr.com/
- http://www.getacoder.com/
উন্নত দেশে আউটসোর্সিংঃ
উন্নত দেশগুলিতে (আমেরিকা কিংবা ইউরোপ) মজুরী অত্যন্ত বেশি। কোন কোম্পানীর যদি ওয়েবসাইট তৈরী করার প্রয়োজন হয়, এজন্য যদি একজন ওয়েব ডিজাইনার নিয়োগ করতে হয় তাহলে বিপুল পরিমান টাকা গুনতে হয়। সে কাজটিই অন্য কোন আমাদের মত উন্য়নশীল দেশের(যে দেশের মজুরি অনেক সস্তা) ওয়েব ডিজাইনার দিয়ে করিয়ে নিলে তুলনামুলক কম টাকায় করানো যায়। তাই ঐসব দেশের মানুষ আমাদের মত দেশ থেকে করিয়ে নেন তাতে করে দুজনেরই লাভ। বর্তমান ইন্টারনেট ব্যবস্থায় খুব সহজে এ কাজ করা সম্ভব। আপনি যদি ওয়েব ডিজাইনার, গ্রাফিক্স ডিজাইনার, অথবা আর্কিটেকচার যাই হোন না কেন ইন্টারনেটের মাধ্যমেই তাদের কাজ করতে পারেন, ঘরের বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন নেই।
সোজা কথা বলতে গেলে উন্নত দেশগুলো কাজের মূল্য বা খরচ কমানোর জন্য আউটসোর্সিং করে থাকে। আমাদের পার্শবর্তী দেশ ভারত,পাকিস্তান এবং ফিলিপাইন সেই সুযোগটিকে খুবই ভালভাবে কাজে লাগিয়েছে। আমরাও যদি ফ্রিল্যান্সিং এর বিশাল বাজারের সামান্য অংশ কাজে লাগাতে পারি তাহলে এটি হতে পারে আমাদের অর্থনীতি মজবুত করার শক্ত হাতিয়ার।